আমরা অনেকেই হয়তো পাঁচালি পড়েছি বা শুনেছি। পাঁচালি হলো এক ধরনের লোকজ গীতিকথা। আমাদের হিন্দুধর্মে বিভিন্ন দেব-দেবীর নামে পাঁচালি আছে। এই পাঁচালিগুলোতে মূলত সেইসব দেবদেবীর কাহিনি, উপাখ্যান, মহিমা, স্তুতি, প্রার্থনা ইত্যাদি বিভিন্ন ছন্দে বর্ণিত থাকে। যা সাধারণত সংশ্লিষ্ট দেবদেবীর পূজার সময়ে সুর করে পাঠ করা হয়। চলো, মনসার পাঁচালির কিছু অংশ সুর করে পড়ি।
চলো, আমরা মনসার পাঁচালিতে কোন দেবী সম্পর্কে বলা হয়েছে আর তাঁর সম্পর্কে কী কী বলা হয়েছে তা দলে/জোড়ায় আলোচনা করে প্রত্যেকে 'দেবী-কথন' ছকে পয়েন্ট আকারে লিখি।
ছক ২.৬: দেবী-কথন' ছক
|
বাংলার সাহিত্য-নাটক-সিনেমা-গানে আমরা বেহুলা-লখিন্দরের কথা অনেক শুনেছি। প্রায় সাতশ বছর আগে এই কাহিনি নিয়ে লেখা হয়েছিল মনসামঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ কাব্য। এই কাহিনিতে আমরা দেখি, দেবী মনসা পৃথিবীতে নিজের পূজা প্রচলনের জন্য চাঁদ সওদাগরকে কতভাবেই না অনুরোধ করেছেন। চাঁদ সওদাগরের সব নৌকা ডুবিয়ে তাকে নিঃস্ব করেছেন। একে একে ছয় ছেলেকে মেরে ফেলেছেন। তবুও চাঁদ সওদাগরের কাছ থেকে পূজা আদায় করতে পারেননি মনসা দেবী। এরপর চাঁদ সওদাগরের ছোট ছেলে লখিন্দরও বিয়ের রাতে মনসার পাঠানো সাপের কামড়ে মারা যায়। কিন্তু স্ত্রী বেহুলা বহু বিঘ্ন-বিপত্তি অতিক্রম করে স্বর্গে গিয়ে লখিন্দরের প্রাণ ফিরিয়ে আনে। এই কাহিনিই মনসার পাঁচালিতে বর্ণনা করা হয়েছে। মনসাপূজায় এই পাঁচালি পাঠ করা হয়।
|
ছক ২.৭: মনসার গল্প
|
যে গল্পটি লেখা হয়েছে তাতে মনসা দেবীর কাহিনি ফুটে উঠেছে। এই যে আমরা বিভিন্ন দেব-দেবীর পাঁচালি পড়ি, পূজা-অর্চনা করি এগুলো আমাদের ধর্মাচারের অংশ। এবারে তাহলে আমরা ধর্মাচার সম্পর্কে জেনে নেই।
ধর্মাচার: ধর্মাচার হলো ধর্মীয় রীতি ও নীতির অন্তর্গত কিছু আচার-অনুষ্ঠান বা ক্রিয়াকর্ম। আবার ধর্মানুষ্ঠানের সময় যেসব রীতিনীতি আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয় তাও ধর্মাচার। ধর্মাচারকে অনেক সময় লোকাচারও বলা হয়। মানুষের বিশ্বাস অনুসারে অঞ্চলভেদে রীতিনীতির পার্থক্যের কারণে ধর্মাচার লোকাচারে পরিণত হয়। হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুসারে সংক্রান্তি উৎসব, গৃহপ্রবেশ, জামাইষষ্ঠী, রাখিবন্ধন, হাতেখড়ি প্রভৃতি হচ্ছে ধর্মাচার।
দেবদেবী: হিন্দুধর্মে দুভাবে ঈশ্বরের উপাসনা করা হয়। নিরাকার ও সাকার রূপে। পরমেশ্বরের অস্তিত্ব প্রকৃতিতে বিরাজমান। প্রকৃতির গাছপালা জীবজন্তু আকাশ-বাতাস সবকিছুর মধ্যে পরমেশ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে পরমেশ্বরের রূপ কোনো আকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তাই তিনি নিরাকার। নিরাকার হলেও ভক্তের আহ্বানে পরমেশ্বর বিশেষ উদ্দেশ্য, বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও বিশেষ কাজের জন্য সাকার রূপে ভক্তের কাছে আবির্ভূত হন। তখন তিনি সুনির্দিষ্ট রূপ, সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতার অধিকারী হন। পরমেশ্বরের সেই সাকার রূপকে বলা হয় দেবদেবী। যেমন- ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা, শীতলা, শনি প্রমুখ।
পূজা-অর্চনা: ধর্মীয় রীতিনীতিকে অনুসরণ করে যেসব অনুষ্ঠানাদি করা তাই ধর্মানুষ্ঠান। পূজা হলো একটি ধর্মানুষ্ঠান। পূজা শব্দের অর্থ ভক্তি নিবেদন করা; শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বা সম্মান জানানো। পূজা হিন্দুধর্মের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। হিন্দুধর্মে ঈশ্বরের নিরাকার ও সাকার উভয় রূপের উপাসনার বিধান আছে। দেবদেবীর মূর্তি বা প্রতিমা হলো ঈশ্বরের বিভিন্ন গুণের রূপকল্প বা প্রতীক। স্থান ও কালভেদে বিভিন্ন প্রকার পূজানুষ্ঠান প্রচলিত আছে। যেমন: গৃহে বা মন্দিরে নিত্যপূজা, আবার বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে বিশেষ পূজা করা হয়, যেমন: দুর্গাপূজা। কোনো শুভ কাজের শুরুতে বা সফলতা লাভের উদ্দেশ্যেও আরাধ্য দেবদেবীর পূজা করা হয়ে থাকে। শাস্ত্রীয় বিধিবিধান মেনে আরাধ্য দেবদেবীর পূজা করা হয়। শাস্ত্রমতে আসনশুদ্ধি, সংকল্প, বিঘ্ন অপসারণ, প্রাণপ্রতিষ্ঠা, মন্ত্রপাঠ, যজ্ঞ, আরতি, অঞ্জলি, বিসর্জন প্রভৃতি পূজার অঙ্গ। আবার গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, পাদ্য, অর্ঘ্য ইত্যাদি বাহ্য-উপচারে দেবদেবীর পূজা করা হয়। মনের ভাব, ভক্তি, শ্রদ্ধা, নিষ্ঠা, ব্যাকুলতা, একাগ্রতা ইত্যাদি অন্তঃ-উপচারের সাথে পূজা করলে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ হয়। পূজা সম্পর্কে শ্রীমদ্ভগবদ্দীতায় বলা হয়েছে-
পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি।
তদহং ভক্ত্যুপহৃতমন্নামি প্রযতাত্মনঃ।।
(গীতা, ৯/২৬)
সরলার্থ: যে ভক্ত পত্র, পুষ্প, ফল, জল ভক্তিসহকারে আমাকে উৎসর্গ করে, শুদ্ধচিত্ত সেই ভক্তের ভক্তিপূর্ণ উপহার আমি সানন্দে গ্রহণ করি।
নিচে মনসাপূজা ও শনিপূজার বিবরণ দেওয়া হলো:
মনসা সাপের দেবী। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে মনসাপূজা হয়। মনসাপূজার সঙ্গে মানুষের জীবন -জীবিকার সম্পর্ক রয়েছে। একসময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক স্থানের মানুষ জলাশয়ের ধারে, নদীর পাড়ে, জঙ্গলের মধ্যে বসবাস করত। এসব স্থানে প্রচুর সাপের বাস ছিল। এ কারণে মানুষ সাপের দংশন থেকে রক্ষা পেতে মনসা দেবীর পূজা করত।
মনসা মূলত লৌকিক দেবী। হিন্দুদের মধ্যে অনেকে তাঁর পূজা করে। মানুষের মাধ্যমে লৌকিক সমাজে মনসাপূজার প্রসার ঘটেছে। পরবর্তীকালে সৃষ্ট কিছু পুরাণে মনসা দেবীর উদ্ভব ও প্রসারের কথা বলা হয়েছে। এভাবে লৌকিক থেকে তিনি পৌরাণিক দেবীতে পরিণত হয়েছেন।
মনসা দেবীকে বিষহরী, মহাজ্ঞানযুক্তা ও সিদ্ধিদাত্রী বলা হয়। সাধারণ বৈষয়িক জ্ঞান থেকে উচ্চতর জ্ঞান হলো মহাজ্ঞান। মহাজ্ঞান জাগরিত হলে মনের হিংসা, বিদ্বেষ, নিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি নষ্ট হয়। হিংসা-বিদ্বেষ মনকে বিষময় করে। সাপের বিষের যন্ত্রণা থেকেও যা তীব্রতর। মহাজ্ঞান সেই বিষকে বিনষ্ট করে। মনসাপূজার মাধ্যমে মানুষের মনে মহাজ্ঞান জাগরিত হয়। মানুষের মনের বিদ্বেষ-বিষ নষ্ট হয়। মন আনন্দে ভরে ওঠে। সে কারণে তিনি বিষহরী। আবার মহাজ্ঞানী ধাপে ধাপে সিদ্ধির পথে অগ্রসর হন। দেবী মনসাকে পূজার মাধ্যমে সেই সিদ্ধি লাভ হয়, তাই তিনি সিদ্ধিদাত্রী।
মনসা দেবীর চার হাত। নিচের বাম হাতে সাপ। নিচের ডান হাতে অভয়মুদ্রা। প্রতিটি হাতে রয়েছে অতি বিষধর সাপের কঙ্কণ। দেবীর মাথায় সাতটি সাপের একটি মুকুট। প্রতিটি সাপের মাথায় রয়েছে মণি। সাদা চাঁপা ফুলের মতো তাঁর গায়ের রং। তাঁর পরনে উদীয়মান সূর্যের মতো লাল রঙের কাপড়। মনসাকে ঘিরে আছে আটটি সাপ- অনন্ত, বাসুকি, পদ্ম, মহাপদ্ম, তক্ষক, কুলীর, কর্কট ও শঙ্খ। তাঁর বাহন হাঁস। চন্দ্রবদনা দেবী হাঁসের উপর বসে থাকেন। তাঁর পায়ের নিচে রয়েছে পদ্মের আসন।
মনসাপূজা করা হয় দুভাবে- ঘট অথবা প্রতিমা স্থাপন করে। এই পূজার জন্য বিশেষ ঘট তৈরি করা হয়। ঘটে সর্পমূর্তি থাকে। বিধি মেনে সেখানে মনসার পূজা করা হয়। এ কারণে অঞ্চলভেদে মনসাপূজার অপর নাম ঘটপূজা। পূজার আঙ্গিনায় সিজ গাছ লাগানো হয়। সিজ গাছ হলো মনসা পূজার জন্য বিশেষ গাছ, যা ফণীমনসা গাছ নামেও পরিচিত। আষাঢ় মাসের কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে মনসা দেবীর পূজা হয়। এই তিথিকে বলা হয় নাগপঞ্চমী। আবার শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথিতেও এই পূজার বিধান রয়েছে। পূজা শেষে মনসা দেবীর পাঁচালি পাঠ করা হয়।
পারিবারিক আঙ্গিনা, একক মন্দির বা সর্বজনীন মন্দিরে মনসাপূজা করার নিয়ম প্রচলিত।
মনসা দেবীর প্রণামমন্ত্র
আস্তিকস্য মুনের্মাতা ভগিনী বাসুকেস্তথা।
জরৎকারুমুনেঃ পত্নী মনসা দেবী নমোহস্তু তে।।
সরলার্থ: আস্তিক মুনির মাতা, বাসুকি নাগের ভগিনী, জরৎকারু মুনির পত্নী মনসা দেবী, তোমাকে নমস্কার।
মনসাকে সাপের দেবী হিসেবে পূজা করা হয়। এতে মানুষের মনে সাপের ভীতি দূর হয়। জল-জঙ্গলপূর্ণ ভূখন্ডে জীবন-জীবিকার জন্য রাতবিরাতে মানুষকে নানা কাজে বের হতে হয়। সেসময়ে মনসার পূজারীর মনে সাপের ভীতির পরিবর্তে সাহস বা আস্থা বিরাজ করে। ফলে সাপ দেখে ভক্ত ভয় পায় না।
সাপ একটি প্রাকৃতিক প্রাণী। তার ওপর দেবত্ব আরোপ করে পূজা করলে প্রকৃতির প্রতি মানুষের আন্তরিক ভালোবাসা প্রকাশ পায়। মানুষ সাপকে হত্যা না করে তাকে রক্ষা করে। সাপরক্ষার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পায়। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হলে মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সাপের ভীতি দূর করা, সাপকে বাঁচানো, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার পাশাপাশি প্রকৃত জ্ঞান লাভ ও মনের হিংসা-বিদ্বেষ দূর করাই মনসাপূজার উদ্দেশ্য। মনসাপূজার কয়েকটি প্রধান উদ্দেশ্য আমরা প্রত্যেকে 'মনসা-স্তুতি রহস্য' ছকে লিখি।
ছক ২.৮: মনসা-স্তুতি রহস্য
|
শনিদেবের পরিচয়
হিন্দুধর্মে একজন দেবতা শনি। নবগ্রহের মধ্যে অন্যতম গ্রহ শনির নাম অনুসারে তাঁর নামকরণ। ব্যক্তিগত জীবনের নানা বাধাবিপত্তি দূর করা এবং পৃথিবীর কল্যাণের জন্য শনিপূজা করা হয়।
সূর্য ও বিশ্বকর্মার কন্যা ছায়ার পুত্র শনি। তিনি পৌরাণিক দেবতা। তাঁর চার হাত। হাতে ধীর-ধনুক ও দন্ড। অসদাচারীকে শাস্তিপ্রদানের প্রতীক এই দণ্ড। তাঁর গায়ের রং নীল। পরিধেয় বস্ত্র কালো। কালো রঙের মেঘ
পুঞ্জীভূত হয়ে অঞ্জনের (কাজলের) মতো দেখায়। এ কারণে তাঁকে 'নীল-অঞ্জন-চয়-প্রখ্য' বলা হয়। তাঁর গতি অত্যন্ত ধীর, শনিগ্রহের মতো। সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর ঘুরে আসতে সময় লাগে এক বছর। সেখানে শনিগ্রহের সময় লাগে ঊনত্রিশ বছর। ধীরগতির জন্য তাই শনিদেবকে 'শনৈশ্চর' বলা হয়। 'শনৈঃ' শব্দের অর্থ ধীরে ধীরে।
প্রতি শনিবার গৃহের আঙ্গিনায় শনিদেবের পূজার বিধান রয়েছে। সর্বজনীন শনিমন্দিরেও শনিপূজা করা যায়।
পূজার জন্য লৌহ-আসন, লৌহ-পাত্র, লৌহ-ঘট দরকার হয়। বিকল্পে কালো কাপড়ে মোড়া আসন, কালো রঙের পাত্র এবং কালো রঙের ঘট ব্যবহার করার বিধান রয়েছে। এছাড়া কালো তিল, কালো বা নীল রঙের ফুল, কালো শাড়ি বা কালো পাড়যুক্ত শাড়ি মুখ্য উপচার। এছাড়া ঋতুভিত্তিক পাঁচ প্রকারের ফল, পাঁচ প্রকারের শস্য, ধূপ-দীপ, পান-সুপারি, আটা, গুড়, বাতাসা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। পাড়া-প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করা হয়। পূজা শেষে শনিদেবতার পাঁচালি পাঠ করা হয়। পাঁচালি পাঠ শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
আমরা প্রত্যেকে শনিদেবের পূজার উপচার-সংশ্লিষ্ট নিচের 'চেনা উপচার' ছকটি পূরণ করি।
ছক ২.৯: চেনা উপচার
শনিদেবের পূজায় যেসব উপচার তুমি দেখেছ | শনিদেবের পূজায় যেসব উপচার তুমি সহজে সংগ্রহ করতে পারো |
|
|
নীলাঞ্জন-চয়-প্রখ্যং রবিসূত-মহাগ্রহম্।
ছায়ায়া গর্ভসম্ভূতং তং নমামি শনৈশ্চরম্।।
সরলার্থ: নীল অঞ্জনের ন্যায় রং, ছায়ার গর্ভজাত সূর্যদেবের পুত্র শনিদেবতাকে নমস্কার।
শনিদেবের পাঁচালি পাঠ করার আগে গণেশ, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী প্রমুখ দেবতাদের স্মরণ করতে হয়। এরপর শনিদেবতাকে স্মরণ করে পাঁচালি পাঠ শুরু করতে হয়।
ব্রাহ্মণের উপাখ্যান
শ্রীহরি নামেতে এক ছিল দ্বিজবর।
করিতে ব্রাহ্মণ সেবা ছিল মন তাঁর ।।
নিত্য ভিক্ষা করি করে উদর পূরণ।
তাহাতে দ্বিজ সেবা হয় অনুক্ষণ ।।
বিনা চিন্তামণি চিন্তা অন্য চিন্তা নাই।
কেমনে সে চিন্তামণি চিনিবারে পাই।।
(সংক্ষেপিত)
মানুষের মনের আশা-আকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। আশা-আকাঙ্ক্ষার পূরণ না হলে মনে এক ধরনের অতৃপ্তি ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় অনেক সময় মানুষ বিপথগামী হয়। অন্যায় কাজে যুক্ত হয়। শনিদেবতা সেই অন্যায়কারীকে শাস্তি দেন। শনিদেবতার শাস্তির ভয়ে মানুষ পাপকর্ম থেকে বিরত থাকে। এভাবে ব্যক্তি-মানুষ ও সমাজ সুন্দর হয়।
পৃথিবীর ওপর সৌরমণ্ডলের গ্রহগুলোর প্রভাব রয়েছে। গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে গাছে ফুল ফোটে, ফল ধরে, বর্ণে গন্ধে স্বাদে পরিপূর্ণ হয়। শনিগ্রহের প্রভাবও তার ব্যতিক্রম নয়। শনিগ্রহের কুপ্রভাবে পৃথিবীতে এক ধরনের বিরূপ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আবার সুপ্রভাবে পৃথিবী ফল-ফসলে পরিপূর্ণ হয়। প্রাকৃতিক গ্রহের দেবমূর্তিই শনিদেবতা। শনিদেবতার শুভ প্রভাবে ব্যক্তিগত এবং সার্বিক অমঙ্গল দূর হয়। এ কারণে ব্যক্তি ও সমাজের পাশাপাশি সমগ্র পৃথিবীর মঙ্গল সাধনের জন্য আমরা শনিদেবতার পূজা করে থাকি।
ছক ২.১০: শনিদেবের প্রভাব
শনিদেবের পূজা করলে জগতের যে সকল কল্যাণ হয়' তা নিজের জীবনের আলোকে লিখি - |
১.
২.
৩.
|
ছক ২.১১: কল্যাণ-ঘট
যে পূজার ঘট বানিয়েছি | সেই পূজার কল্যাণকর দিক |
|
|
আরও দেখুন...